আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আরও কার্যকর অর্থায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চলুন আমরা এমন একটি মর্যাদা, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার অর্থনীতি গড়ে তুলি, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।’
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন : টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অর্থায়নের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন’ শীর্ষক সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এসডিজি অর্জনে বছরে চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ অপরিহার্য হলেও তা চ্যালেঞ্জিং। এই ঘাটতি মোকাবিলায় দেশীয় সম্পদ সংগ্রহ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং জবাবদিহিমূলক কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর নির্ভরশীল মানুষের কণ্ঠস্বর শোনার দায়িত্ব নিতে হবে। বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি, দারিদ্র্য একজনের স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সম্পদের ন্যায্য প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হলেই টেকসই পরিবর্তন সম্ভব। নারী উদ্যোক্তা, যুবসমাজ, বস্তিবাসী শিশু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ সৃষ্টি হলে সমাজে ইতিবাচক রূপান্তর ঘটবে।
প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্থায়নকে শক্তিশালী করবে—
১. ন্যায্যভাবে দেশীয় সম্পদ উত্তোলন ও বহুজাতিক করপোরেশনের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
২. সামাজিক ব্যবসা ও নবীন অর্থায়নের প্রসার।
৩. বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো ও ঋণ শাসন সংস্কার।
৪. স্বচ্ছতা ও নাগরিক অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা।
৫. দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য বিনিয়োগের ত্বরান্বিতকরণ।
তিনি আরও বলেন, সেভিলে গৃহীত অঙ্গীকারগুলো দেশীয় সম্পদ সংগ্রহ, অবৈধ অর্থপ্রবাহ প্রতিরোধ, উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার নতুন কাঠামো তৈরি করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস মন্তব্য করেন, ‘সেভিলে অঙ্গীকার আমাদের পথপ্রদর্শক। মানবতা আমাদের সেই পথে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছে।’