আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::: ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৯। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সেবু দ্বীপের উত্তর প্রান্তে বোগো শহরের কাছে কম্পনটি অনুভূত হয়।
সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে বোগো শহরে। এখানেই চার শিশুসহ অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। শহরটির কয়েকটি বাড়ি ভূমিধসে চাপা পড়লে তিনজন মারা যান। এছাড়া সান রেমিগিও পৌর এলাকায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন ফিলিপাইন কোস্টগার্ডের সদস্য। এক ক্রীড়া কমপ্লেক্স ধসে পড়ে কয়েকজন নিহত হন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ। তাবুয়েলানে এলাকায়ও একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় পুলিশ।
ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকাজ চলছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬-এ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। উদ্ধারকারীরা আশঙ্কা করছেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে আরও মানুষ আটকা পড়ে থাকতে পারে। রাতের আঁধার আর পরাঘাতের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
ভূমিকম্পে সেবু ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, ধসে পড়ে বেশ কিছু ভবন ও স্থাপনা। পরে রাতের দিকে আংশিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়। সড়ক ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থারও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
প্রবল কম্পনের পর প্রথমে সুনামি সতর্কতা জারি করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে ফিলিপাইন ইনস্টিটিউট অব ভলকানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজি। সংস্থাটি জানায়, সমুদ্রপৃষ্ঠে সামান্য পরিবর্তন হলেও তাতে বড় কোনো প্রভাব পড়েনি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা মারথাম প্যাসিলান জানান, ভূমিকম্পের সময় তিনি একটি গির্জার কাছে ছিলেন। গির্জার দেয়াল থেকে পাথর ভেঙে পড়তে দেখেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি আতঙ্কে স্থির হয়ে গিয়েছিলাম, কেবল কম্পন থামার অপেক্ষা করছিলাম।’
ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে সেবু প্রদেশসহ একাধিক শহরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা এবং ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা চালানো হচ্ছে।