অনুসন্ধান ডেস্ক ::: বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সিলেটের উন্নয়নে বরাদ্ধ অনেক বাড়ানো হবে এবং পারিকল্পিত উন্নয়ন হবে বলে জানিয়েছেন আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী দলীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। বিগত দিনে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে সিলেট উন্নয়নে পিছিয়েছে মনে করেন তিনি। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাব সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তবে সিসিক মেয়র হিসেবে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীর বিগত দিনের কাজের মূল্যায়নে ভূয়সী প্রশংসা করেন খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
তিনি বলেন, মেয়র হিসেবে পূর্বসূরীদের সাথে তুলনা করলে আরিফুল হক চৌধুরীর পারফরমেন্স ছিল প্রশংসনীয়। তাকে একশোতে একশ’ তথা হাই মার্ক দিতেই হবে। তবে উত্তরসূরীর (আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী) সাথে তার তুলনা করবো না, তিনিতো মাত্র ৫/৬ মাস ছিলেন। কিন্তু তার পূর্বসূরীর (বদরউদ্দিন আহমদ কামরান) সাথে যদি তুলনা করেন, তিনি যে পরিমান কাজ করেছেন তাও আবার সরকারী দলের বাইরে থাকা অবস্থায়, বিরোধী দলের মেয়র হয়ে, জাস্ট ফেনমেনোন (বিস্ময়কর)। খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির সাংবাদিকদের সান্নিধ্যে এসে অনেকটা খোলামেলা কথা বলেন রাষ্ট্রকাঠামো নিয়ে।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র পরিচালনায় নিজেকে যেভাবে পরিণত করেছেন, সেটা বিগত দিনে অন্য কেউ পারেননি। রাষ্ট্রের এই অগোছালো অবস্থা থেকে উত্তরণে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপিকেই সে ভূমিকা পালন করতে হবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তিনি বলেন, ফাংশনাল রাস্ট্রের একটা কাঠামো জুডিশিয়ারি, যেটার ওপর ১৮ কোটি মানুষের আস্থা থাকবে, যেটার মাধ্যমে অন্যায় হলে আমি আইনের দ্বারা প্রতিকার পাবো। প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশের ভূমিকা থাকবে, যাতে সেখানে গিয়ে নাকে খত দিতে হবে না। কিন্তু এখন প্রতিকার হিসেবে পুলিশের কাছে কোনো গোষ্টির আশির্বাদ বা সুপারিশ ছাড়া গেলে গোটা সম্পত্তি খুইয়ে আসা লাগবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ পরবর্তী ৫৪ বছরে এখনো আমরা এক পা এগুলো ২ পা পিছিয়েছি। আমরা জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে ভৌগলিক অখন্ডতা বজায় রাখতে চাই, ২০ কোটি মানুষকে ভাল জায়গায় নিতে চাই, তাহলে এখই সময় এই চক্র থেকে দেশকে বের করে আনতে হবে। আশার বিষয়হলো গত ৫৪ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, আগামিতে আর দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে না।
তিনি আরও বলেন, অন্য অনেক দেশের জন্য যেটা এফোর্ট করতে পারে, সেটা বাংলাদেশের জন্য আনেএফোর্টেবল। দেশটা ছোট, মানুষ ১৮/২০ কোটি। কিন্তু মার্জিন অব অ্যারোর বলে একটা কথা আছে, ভুলের মাশুল, অন্য দেশগুলো যাদের জিডিপির হার বেশি, তারা ২০/৫০ কোটি ডলার লস করে ফেললো বা উল্টো পথে দু’বছর হাটলেও তার প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি আছে। দু’দিন পর ঠিকই জায়গায় ফিরে আসবে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এটা কঠিন যেহেতু যেগুলো আমদানি হয়, সেগুলো অত্যান্ত সীমিত, এখনো আমদানি নির্ভর। কোনো শক্ত ভিত্তি নাই। না জুডিশিয়ারি, পুলিশ, সরকারি প্রতিষ্ঠান, কোনো কিছরি ওপর মানুষের আস্থা নেই। এমন কোনো পেশাজীবী নাই, যারা ভাগে বিভক্ত নয়।
আগে এমপিরা দলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতেন না উল্লেখ করে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, এটাও সব দল একমতে এসেছে, আগে অনাস্থা ও বাজেট ছাড়া মতামত দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। দলের বিরুদ্ধে যেতে পারতো না। এখন জবাবদিহীতা আদায়ে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক শক্তিশালী কমিটি থাকে। এ সমস্থ গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে সভাপতি বিরোধীদল থেকে হা, না ভোটে মনোনীত হবেন। দলগুলো একমত হয়েছেন-আগামি দিনে দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। আজীবন থাকার ইচ্ছা থাকবে না। এমপিদের অবাদ মতামত করার কারণে দলের ভেতরে বাইরে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ প্রসারিত হবে।
সিলেট জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মঈন উদ্দিন’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।
বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাবেক সভাপতি আল আজাদ, ইউএনবি’র সিলেট প্রতিনিধি ক্লাবের সিনিয়র সদস্য মোহাম্মদ মহসীন, দেশ রূপান্তরের ব্যুরো প্রধান ফখরুল ইসলাম, সমকাল’র সিনিয়র রিপোর্টার ও বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সল আহমদ বাবলু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিজস্ব প্রতিবেদক ও ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম নবেল, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সিলেট প্রতিনিধি দেবাশীষ দেবু, ক্লাবের সিনিয়র সদস্য শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, ডেইলী স্টারের সিলেট প্রতিনিধি দ্বোহা চৌধুরী।
ক্লাবের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনও উপস্থিত ছিলেন- ক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক রবি কিরণ সিংহ, কোষাধ্যক্ষ দৈনিক জৈন্তাবার্তার বার্তা সম্পাদক আনন্দ সরকার, রাজেশ, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আহাদ, কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজিব রাসেল ও তুহিনুল হক তুহিন।
উপস্থিত ছিলেন খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের মিডিয়া টিমের সমন্বয়ক সিনিয়র সাংবাদিক বদরুদ্দেজা বদর, যুগভেরীর সিনিয়র রিপোর্টার রায়হান উদ্দিন, মোকলেছুর রহমান, শ্যামল সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার সোহাগ আহমদ, মাইটিভির ক্যামেরা পার্সন শাহিন আহমদ, ক্লাব সদস্য ও আজকের পত্রিকার সহকারি সম্পাদক এসএম মিজানুর রহমান মিজান মোহাম্মদ, ক্লাব সদস্য আশরাফ আহমদ, দৈনিক শ্যামল সিলেটের স্টাফ ফটো সাংবাদিক রেজা রুবেল প্রমুখ।