নিউজ ডেস্ক :: ঋতুরাজ বসন্তের শেষের দিকে পবিত্র মাহে রমজানের প্রথমদিনে মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টির মধ্যেই ইফতার কেনাকাটায় ধুম পড়েছে সিলেটে। দুপুর গড়িয়ে আসর নামাজের পর বিকেল হতেই জমে উঠেছে ইফতারের বাজার।
মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে রাতে সেহরি খেয়ে রোজা রেখেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সারাদিন অনহারে থেকে ইফতারিতে রসালো ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন রোজাদাররা।
তাই বাড়িতে যেমন ইফতার তৈরিতে গৃহিনীরা নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকেন তেমনি হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোও ব্যস্ত হয় পড়ে ইফতার বিক্রিতে। সিলেটের জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, রিকাবীবাজার, লামাবাজার, শেখঘাট পয়েন্ট, ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল রোড, সুবিদবাজারে পাওয়া যায় অভিজাত ইফতার। তবে সিলেটের অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট, খাবারের দোকান, ফুটপাত ও সড়কের অলিতে-গলিতে জমে হরেক রকমের ইফতার।
সিলেটের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে মহল্লার গলি পথেও ইফতারির ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে বসে গেছেন দোকানিরা। বিভিন্ন স্থানে পসরা সাজিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ইফতার। দোকানগুলেতে ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই রকমারি ইফতার তৈরি করা হয়েছে। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই রোজার প্রথম দিনে মানুষ এখন ভিড় করছেন শহরের অভিজাত ইফতার পণ্যের দোকানগুলোতে।
ঘিয়ে ভাজা বোম্বে জিলাপি, রেশমি জিলাপি, স্পেশাল ফিরনি, ক্ষিরসা, ফালুদা, নবাবী টানা পরোটা, কাশ্মীরি পরোটা, চিকেন মসলা, রেশমি কাবাব, তেহরি, কাচ্চি বিরিয়ানি, চিকেন ফ্রাই, নানান রকমের জুসসহ জনপ্রিয় ইফতার পণ্যগুলো এবারও শুরুতেই নজর কাড়ছে।
এছাড়া মোরগ পোলাও, লাবাং, পরোটা, ছোলা, বিভিন্ন ধরনের কাটলেট, শাহী জিলাপি, পেঁয়াজুসহ নানা পদের খাবার উল্লেখ করার মতো। রয়েছে শাকপুলি, ডিম চপ, কাচ্চি বিরিয়ানি, তেহারি, কবুতর ও কোয়েলের রোস্ট, খাসির রানের রোস্ট, দইবড়া, হালিম, নুরানি লাচ্ছি, পনির, পেস্তা বাদামের শরবত, ছানামাঠা, কিমা পরোটা, ছোলা, ঘুগনি, বেগুনি, আলুর চপ ইত্যাদি।
এদিকে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে গত বছরের চেয়ে এবার ইফতার সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেলেও ক্রেতা সমাগমে কোনো ঘাটতি নেই।
অন্য বছরের তুলনায় এবার ইফতার সামগ্রীর দাম বেশি বলেও জানিয়েছেন ক্রেতারা। ফলে ইফতার কিনতে এসে সাধারণ মানুষকে হিমশিম খেতে হয়েছে।
সিলেটের বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় ব্যবসায়ীদের ইফতার সাজানোর কাজ। দুপুর যত বিকেলের দিকে গড়াতে থাকে ততই বাড়তে থাকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাবেশ। বাড়তে থাকে কোলাহল। জমে ওঠে থরে থরে সাজানো রকমারি ইফতার বিক্রির ধুম। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসতেই বাড়তে থাকে বিক্রেতাদের হাঁক ডাক। নানা বয়সী ক্রেতাকে ঠোঙা ভর্তি করে নিয়ে যেতে দেখা যায় এসব খাবার। ছোলা, পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনী, মুড়ি, কাবাব, জিলাপি, হালিম, বুরিন্ধাসহ নানা স্বাদের ইফতার কিনতে আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিসের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ক্রেতারা এসে ভিড় করেন ইফতারের দোকানগুলোতে।
জিন্দাবাজার পানসী রেস্টুরেন্টের কমকর্তা রুবেল হোসাইন বলেন, প্রতিদিন ৪০-৫০টি আইটেম তৈরি করেন তারা। তার মধ্যে রয়েছে স্পেশাল কোপ্তা (প্রতি পিস ৩০ টাকা), চিকেন শাসলিক প্রতি পিস ৮০ টাকা, চিকেন লেগ প্রতি পিস ৭০ টাকা, বিফ বল প্রতি পিস ২৫ টাকা, শামি কাবাব প্রতি পিস ২০ টাকা, বিফ কাটি কাবাব প্রতি পিস ৮০ টাকা, জালি কাবাব প্রতি পিস ২০ টাকা, ডিমচপ প্রতি পিস ২০ টাকা, বেগুনি প্রতি পিস ৬ টাকা, পেঁয়াজু কেজি প্রতি ১৫০ টাকা, জিলাপি ছোট ১৮০/১৬০ টাকা কেজি ও বড়গুলোর কেজি ১৫০ টাকা।
পালকির পরিচালক কবির আহমদ জানান, ইফতারে পালকির বিশেষ আইটেমগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বড় বাপের পেলায় খায়’, মাটন লেগ রোস্ট ১৩০০/১৫০০ টাকা, আস্ত মুরগির রোস্ট ৪০০ টাকা, মোরগ মসল্লা ২০০টাকা, মাটন লেগ রোস্ট ৩৫০ টাকা, ছোলা ১৮০ টাকা, বড় জিলাপি কেজি ১৬০টাকা