অনুসন্ধান নিউজ :: ব্যাটারিচালিত বাহন বন্ধে মাঠে নামছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। উচ্চ আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে আগামী ৮ নভেম্বর থেকে নগরীর সড়কে ব্যাটারিচালিত বাহন বন্ধে অভিযান শুরু করবে সিসিক। এদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা যখন সিসিক বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন তখন একটি চক্র ইতোমধ্যে চালক ও মালিকদেরকে উসকে দিচ্ছে।
সিসিকের নির্দেশনা জারি করার পর এলাকা ভিত্তিক চালক ও মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে যাচ্ছে চক্রটি। ইতোমধ্যে চক্রটি সিলেট নগরীর তেররতন, টিলাগড়, বালুচর, মাছিমপুর, পশ্চিম তেররতন, আম্বরখানা, শাহী ঈদগাহ, মদিনা মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বৈঠক করেছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় রিকশা চলাচলের দাবি জানিয়ে ৭ নভেম্বর সিসিক ঘেরাও করার পাশাপাশি পরদিন সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয়া।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ব্যাটারিচালিত বাহন বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। সিসিক আগামী ৮ নভেম্বর থেকে অভিযান চালাবে। সিসিকের অভিযানকে একটি চক্র ইস্যু করে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনকি চক্রটি এলাকা ভিত্তিক বৈঠক করে যাচ্ছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। তাদের এমন কার্যক্রম পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।
কয়েকজন রিকশা চালক জানান, সিসিক থেকে নির্দেশনা দেয়ার পর আমরা সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সাথে বৈঠক করেছি। তারা আমাদেরকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা এলাকা ভিত্তিক এখন কাজ করে যাচ্ছি। মালিক ও চালক মিলে একি সাথে আন্দোলন শুরু করবো। যদি আমাদের সাথে কোন অন্যায় করা হয় তাহলে আমরাও এর যথাযথ জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছি।
তারা জানান, আন্দোলনের নামে প্রতিটি এলাকার ব্যাটারিচালিত বাহনের চালক ও মালিকদের কাছে থেকে জন প্রতি ৫০-১০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। আন্দোলনের সময় শ্রমিকদের খাবার ও মামলা হলেও এই টাকা থেকে পরিচালনা করা।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান খান জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে সিসিক। আমরা আমাদের কাজ করে যাবো। আইন বহির্ভূত কেউ কোন অপতৎপরতা চালালে আমরা আইনের আশ্রয় নেবো।
তিনি আরও জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে সিলেট মহানগরী এলাকায় কোনো প্রকার ব্যাটারিচালিত যানবাহন আর চলতে দেওয়া হবে না। আগামী ৮ নভেম্বর থেকে আদালতের নির্দেশে কঠোরভাবে অভিযান শুরু করবে সিসিক। যদি কেউ সিসিকের এই নির্দেশনা না মানেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের যৌথ বেঞ্চ সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত বাহন বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে সিলেট ট্রাফিক পুলিশ ও সিসিক নিয়মিত অভিযান চালালেও এসব অবৈধ বাহন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বরং দিন দিন এসব যানের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ অবস্থায় সিলেট মহানগরী এলাকায় সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যানজট নিরসনের লক্ষে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, টমটম চলাচলের বন্ধে ব্যাপারে আগামী ৮ নভেম্বর থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে অভিযানে নামবে সিসিক। সিসিকের এমন নির্দেশনা কেউ না মানলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।