অনুসন্ধান নিউজ :: স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হলেও স্বৈরতান্ত্রিক বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থা অক্ষুন্ন রেখে সাম্রাজ্যবাদের নতুন দালাল ক্ষমতায় এসে স্বৈরতন্ত্রকেই পাকাপোক্ত করছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
১৬ আগস্ট বিকেল ৫টায় সংগঠনের সুরমা মার্কেটস্থ জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় জেলা সভাপতি এডভোকেট কুমার চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া। বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখর সেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, যুগ্ন সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সাবেক সভাপতি উসমান গনি, জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ (শান্ত), এনডিএফ শাহপরাণ থানা কমিটির সভাপতি খোকন আহমদ, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মুহিদুল ইসলাম, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সহ প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন আজ থেকে ১৬ বছর আগে মার্কিন পরিকল্পনায় ও মার্কিন-ভারতের সমন্বিত তৎপরতায় স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। ক্ষমতায় এসেই মার্কিন পরিকল্পনা কার্যকর করার সাথে সাথে ভারতের স্বার্থরক্ষায় একের পর এক জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে। ব্যাপক দমন-পীড়ন, নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে গণহত্যা সংঘটিত করে। আন্দোলনকারীদের তুলে নিয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতন, হাজার হাজার ছাত্র-শ্রমিক-জনতাকে গ্রেফতার এবং আহত করে ছাত্র সমাজকে দমন করতে ব্যর্থ হয়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার জনরোষে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। পরবর্তীতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পরিকল্পনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে যে অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে তার মাধ্যমে এদেশে মার্কিনের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক রণনীতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী যুদ্ধে সম্পৃক্ত করার বিপদ আরও বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের উচ্ছেদের পরিণতিতে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়নি। ফলে সমাজ দেহের অভ্যন্তরে জ্বলছে জাতীয় মুক্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সংগ্রামের লেলিহান শিখা। আর এই মুক্তির আকাঙ্খা যাতে স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা উচ্ছেদের লক্ষ্যে অগ্রসর হতে না পারে তার জন্য সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের ধুয়ো তুলে জণগনকে বিভক্ত করে স্বীয় স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। যা এবারের কোটা সংস্কার আন্দোলনেও ক্রিয়াশীল রয়েছে। আজ সরকারের রূপ নিয়ে যে তৎপরতা তা স্বৈরাচারি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকেই শক্তিশালী করবে। এছাড়া স্থিতিশীলতা আনয়নের প্রশ্নে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী সুতীব্র দ্বন্ধের কারণে আরও নানা ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এক সাম্রাজ্যবাদের পরিবর্তে আরেক সাম্রাজ্যবাদ নয়, এক দালালের পরিবর্তে আরেক দালাল নয়, স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিবর্তনের মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করার আহবান জানান এবং সংখ্যালঘু সকল জাতি-ধর্মের মানুষের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং সাম্প্রদায়িক শক্তি ও উগ্র-জাতীয়তাবাদী শক্তিকে প্রতিহত করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কর্মসূচী গ্রহীত হয় যা আগামী ২১, ২৫ ও ২৮ আগস্ট যথাক্রমে কোর্ট পয়েন্ট, কদমতলী পয়েন্ট এবং আম্বরখানা পয়েন্টে পথসভা অনুষ্ঠিত হবে।