অনুসন্ধান নিউজ :: জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ (জেসিপিএসসি)-এ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস- ২০২৪’ উদযাপন করা হয়। ১৭ মার্চ রবিবার সূর্যোদয়ের সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।
অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রকাশিত দেয়ালিকায় বঙ্গবন্ধুর ছবি ও বাণী প্রদর্শন এবং তাঁর তেজোদীপ্ত বিভিন্ন উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানে ফেস্টুন টানানো হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী ও বর্ণিল জীবন এবং ৭মার্চের ভাষণের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস- ২০২৪’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল তাহিয়াত জালাল চৌধুরী, পিএসসি।
জেসিপিএসসি’র নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা আদিবা কর্তৃক পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনাসভার অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অধ্যক্ষ মহোদয় তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশ্বমানচিত্রে যে কজন মনীষীর নাম হিরন্ময় অক্ষরে শোভিত ও চিরোজ্জ্বল; তাঁদের মধ্যে একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রুপকার, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পুরোধা ও বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের কালজয়ী নেতা; তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষন ব্যক্তিত্ব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিত দৃঢ় মনোবল, সত্য প্রকাশের অগ্নিঝরা বজ্রকন্ঠ ও স্বদেশ প্রেম তাঁকে করেছে চির মহান। পরাধীনতার শিকল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে এবং বিশ্বদরবারে বাঙালি জাতিসত্তাকে একটি সম্মানজনক পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি জীবনব্যাপী ছিলেন প্রত্যয়ী ও সোচ্চার। আজ তাঁর জন্ম দিন। আমি বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন মানব দরদী, রাজনৈতিক সচেতন ও নেতৃত্বের গুণাবলীসম্পন্ন মেধাবী কর্মী। তাঁর সংগ্রাম ও ত্যাগ তাঁকে নিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৫৪ এর যুক্তফ্রণ্ট নির্বাচন, ৫৮ আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬২ এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬ এর ছয়দফা আন্দোলন, ৬৮ এর আগারতলা ষড়যন্ত্র মামলা মোকাবেলা, ৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান, ৭০- এর নির্বাচন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধেও আহ্বান সবই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্ব। দেশকে বাঁচাবার ঐকান্তিক নিষ্ঠা, ৪ হাজার ৬৮২ দিনের কারাভোগ, নানা অত্যাচার জুলুম উপেক্ষা করে জাতিকে মুক্ত করার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুণর্গঠনে নিরলস শ্রম তাঁকে এনে দিয়েছে অপরাজেয় অমরত্ব। আর এরই ফলশ্রুতিতে তিনি আমাদের জন্য রেখে গেছেন স্বদেশ প্রেমের অনুকরণীয় আদর্শ।
প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাফরিন জাহান ও কামরুল ইসলামের যৌথ উপস্থাপনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন সিনিয়র শিক্ষক মো. আতাউর রহমান, বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রভাষক নূরে আজম মন্ডল, সহকারী শিক্ষক স্মিতা দে, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অসীম ঐশ্বর্য সরকার ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তটিনি লাজবস্তি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রধান অতিথি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদেরকে পুরস্কার প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সমন্বয় করেন উপাধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক শারমীন আকতার এবং আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আফরোজা বেগম।