নিউজ ডেস্ক :: গত কয়েকটি স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের অনাগ্রহ দেখে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছিলেন সিলেটবাসী। তবে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ সিলেটে পাল্টে দিয়েছে সেই চিত্র। এ ধাপে বৃহষ্পতিবার (১১ নভেম্বর) ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় বিভাগের ৪৪টি কেন্দ্রে শেষ হলো ভোটগ্রহণ।
বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে চলে টানা ভোটগ্রহণ। সকাল থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে ছিলো ভোটারদের উপচেপড়া ভিড়। এর মধ্যে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের ৪৪টি ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট চলে বিকাল ৪টা অবধি। ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে গণনা। গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
ভোট চলাকালে সিলেটে প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলো পুলিশ, আনসার ও গ্রামপুলিশ। এছাড়াও টহলে ছিলো বিজিবি। নির্বাচনে যাতে কোনোরকমের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে প্রস্তুত ছিলো সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা পুলিশ।
জানা যায়, এই নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন ২ হাজার ৩০০ প্রার্থী। তন্মধ্যে চেয়ারম্যান পদে লড়াই করেছেন ১৯৮ জন। ওয়ার্ড সদস্য পদে ১ হাজার ৬২০ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ৪৮২ জন প্রার্থী চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। এ তিন পদে আরও ৭২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও তারা শেষঅবধি সরে দাঁড়ান নির্বাচন থেকে।
ইসি সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬৮ জন, সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৫২০ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১৫৭ জন প্রার্থী ছিলেন।
সুনামগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৯৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৭৪ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ২১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মৌলভীবাজারে ২১ জন চেয়ারম্যান, ২০২ জন সাধারণ সদস্য পদে এবং ৫২ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে লড়েন।
হবিগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৭২৪ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ৬০ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে ছিলেন।
দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার সিলেট জেলার সদর উপজেলার ৪টি, বালাগঞ্জের ৬টি, কোম্পানীগঞ্জের ৫টি, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ১০টি, দোয়ারাবাজারের ৯টি, হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জের ৫টি এবং মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও সিলেট সদর উপজেলার লামাগাঁও তালুকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের ৩জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ওই কেন্দ্রে প্রায় আধঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রের দুই প্রার্থীর এজেন্টের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে আতংকে মহিলা ও পুরুষ ভোটার লাইন ছেঁড়ে দিকবিদিক ছুটাছুটি শুরু করেন। খবর পেয়ে মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসলে পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়।