নিউজ ডেস্ক :: সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হয়েছে ২০১৯ সালে। সেই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে উভয় শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। তাদের দায়িত্ব ছিল দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা। কিন্তু তিন বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সিলেটে পূর্ণাঙ্গ কমিটির মুখ দেখেনি যুবলীগ। তবে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসার তথ্য দিয়েছেন জেলা-মহানগর যুবলীগের দায়িত্বশীল নেতারা। তারা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেওয়া আছে; এখন কেন্দ্রের অনুমোদনের অপেক্ষা।
যুবলীগ নেতারা জানান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সম্মেলন ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। একদিন পর, ২৯ জুলাই সম্মেলন হয় জেলা শাখার। সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে উভয় শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে যান যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটির মেয়াদ থাকে তিন বছর। সেই মেয়াদও ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে।
কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় যুবলীগে যেসব পদপ্রত্যাশী ছিলেন, তাদেরকে ঘিরে ধরেছে হতাশা। অনেকেই ক্ষুব্ধ।
সম্প্রতি মহানগর যুবলীগে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী এক নেতা বলেন, ‘সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে এখন কেবলই হতাশা, ক্ষোভ। সামনে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন। এজন্য কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপে দ্রুততার সাথে সিলেট যুবলীগকে পুনর্গঠন করে কর্মঠ, পরিশ্রমী, দায়িত্বশীল নেতৃত্ব গঠন করতে হবে।’
এদিকে, আওতাধীন ১৩টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভার সবক’টিতে কমিটি দিতে পারেনি সিলেট জেলা যুবলীগ। ৮টি উপজেলা ও ১টি পৌরসভায় কমিটি করা হয়েছে। অন্যদিকে, মহানগর যুবলীগ ২৭টি ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছে।
দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, জেলা ও মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। জেলা শাখায় ১০১ সদস্যবিশিষ্ট এবং মহানগর শাখায় ১১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ (ভিপি) বলেন, ‘আমরা ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। এখন কেন্দ্র থেকে কমিটির অনুমোদন হওয়ার অপেক্ষা।’
চলতি মাসেই এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন শামীম।
সিলেট মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার বলেন, ‘১১১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য অনেক আগেই আমরা কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। যাচাইবাছাই শেষ করে কখন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হবে, তা কেন্দ্র জানে।’
‘নানা প্রেক্ষাপটে’ পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসতে দেরি হচ্ছে বলে মনে করেন মুশফিক।
যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে সিলেট জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। পরের বছর সম্মেলন হয় মহানগর যুবলীগের। তবে ওই দুই সম্মেলনে কমিটি হয়েছিল সমঝোতার ভিত্তিতে, কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণ করা হয়নি। প্রায় ২৭ বছর আগে, ১৯৯২ সালে সিলেট যুবলীগে নেতৃত্ব নির্বাচনে সম্মেলন করে কাউন্সিলরদের ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল। এর পর ২০১৯ সালের জুলাইয়ে শীর্ষ দুই পদে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।
২০১৯ সালের ২৭ জুলাই সিলেট মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে সভাপদি পদে ৩৬৬ ভোট পেয়ে নেতৃত্ব পান আলম খান মুক্তি। এ পদে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন; শেষপর্যন্ত ৩ জনই সরে দাঁড়িয়েছিলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে মুশফিক জায়গীরদার ৩৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এ পদে আরো দুই প্রার্থী ছিলেন। অন্যদিকে, জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয় ওই বছরের ২৯ জুলাই। সম্মেলনে সভাপতি পদে শামীম আহমদ (ভিপি শামীম) ১১৫ ভোট এবং সাধারণ সম্পাদক পদে শামীম আহমদ (সীমান্তিক শামীম) ১০৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন ৩ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন।
সম্মেলনে জেলা ও মহানগর যুবলীগের শীর্ষ চার পদে আসা নেতাদের তিনজনই আগে থেকেই নেতৃত্বে ছিলেন। মহানগর শাখায় মুক্তি ছিলেন পুরনো কমিটির আহবায়ক, মুশফিক ছিলেন যুগ্ম আহবায়ক। অন্যদিকে জেলা শাখায় পুরনো কমিটির সভাপতি ছিলেন শামীম (ভিপি)। এবার সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন এসেছেন শামীম (সীমান্তিক)। আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহসিন কামরান সর্বশেষ সম্মেলনে কোনো পদেই প্রার্থী হননি।সূত্র-সিলেটভিউ