শিরোনাম :
চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে হাসনাত-সারজিসকে ট্রাকচাপায় হত্যার চেষ্টা সিলেট তারাপুর চা-বাগানের দেবোত্ত সম্পদে অবৈধ দখল পর্যবেক্ষণে ম্যাজিস্ট্রেট ও অপারেশন টিম আনোয়ার ফাইন্ডেশন ইউকের উদ্যোগে সম্মাননা প্রদান গোয়াইনঘাটে ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণ সভা হবিগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় মোটর সাইকেল আরোহী চাচা-ভাতিজা নিহত সিলেট মহানগরীর ভাড়া নির্ধারণ ও অবৈধ গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার দাবিতে সিসিক প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান সিলেট জেলা বিডিআর কল্যাণ পরিষদের মানববন্ধন সিলেটে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিক্ষোভ সমাবেশ সিলেটের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর/ সংস্থা প্রধানদের সাথে মতবিনিময় সিলেটে পার্টনার প্রকল্পের প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে মতবিনিময়

সিলেটে অবিরাম বৃষ্টি, বাড়লো পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা

রিপোর্টার নামঃ
  • বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪
  • ৫৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক :: টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সিলেটে চলমান দ্বিতীয় দফা বন্যায় মহানগর ও জেলাজুড়ে প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। এর মধ্যে মহানগরে ২১টি ওয়ার্ডের অর্ধলক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত। জেলা প্রশাসনের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য এটি। ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে সিলেট। গত ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই শনিবার (১৫ জুন) ফের কবলিত সিলেট।

ঈদের দিন (১৭ জুন- সোমবার) ভোররাত থেকে সিলেটে শুরু হয় ভারী বর্ষণ। সঙ্গে নামে পাহাড়ি ঢল। সকাল হতে না হতেই তলিয়ে যায় মহানগরের অনেক এলাকা। জেলার বিভিন্ন স্থানেও অবনতি হয় বন্যা পরিস্থিতির। সোমবার বিকালে বৃষ্টি থামলে ধীরে ধীরে কিছুটা কমে পানি। কিন্তু মঙ্গলবার ভোররাত থেকে ফের শুরু হয় বৃষ্টি। উজানেও বৃষ্টিপাত হয় প্রচুর। ফলে হু হু করে বাড়তে সিলেটের সব নদ-নদীর পানি। আজ বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩টি নদীর পানি ৬ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৮ জুন) মধ্যরাতে সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এ সময় পর্যন্ত মহানগরের ২১টি ওয়ার্ড ও জেলার ১ হাজার ৩২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন মানুষ বন্যা আক্রান্ত। এর মধ্যে সিলেট মহানগরে অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী।

জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে মহানগরে ৮০টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১৭ হাজার ২৮৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তবে, বেশিরভাগ মানুষজন নিজের ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে ইচ্ছুক নন। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশিদের উঁচু বাসা-বাড়ি বা আত্মীয়-স্বজনের ঘরে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয় সূত্র বুধবার সকাল ৯টায় জানিয়েছে, এ সময় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বইছে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯২ ও শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি বইছে।

এছাড়া সারি-গোয়াইন নদীর সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ০.৯ সে.মি সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে । বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটজুড়ে ২০২২ সালের মতো ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। মহানগরের শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া, মেজরটিলা ও দক্ষিণ সুরমার লাউয়াই, বরইকান্দি, আলমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অনেকের বাসাবাড়িতে গলা পর্যন্ত পানি। নিচু এলাকাগুলোর কলোনি বা বাসা-বাড়ি প্রায় পুরোটাই তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। এতে চরম বিপাকে এসব এলাকার মানুষ। অনেকে গেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে, আবার অনেকে নিজের বাসা-বাড়ি ছেড়ে যেতে চাচ্ছেন না। অপরদিকে, সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুরসহ কয়েকটি উপজেলার গ্রামীণ অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষিজমির ফসল তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেটে ২৪ ঘন্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার ৬টা পর্যন্ত) ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি ৫৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী কয়েক দিন সিলেটে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পানিবন্দী লোকদের উদ্ধারের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালানো হচ্ছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আগামী ৩ দিন সিলেট অঞ্চলে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain