শিরোনাম :
কামালবাজার ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মীসভা সিলেট সীমান্তে ফের কোটি টাকার চোরাই পণ্য-পশু জব্দ সিলেট ডলিয়া গ্রামে শিবমন্দিরের জমি দখলে অপতৎপরতার অভিযোগ-সংবাদ সম্মেলন সিলেটে ভিডিপি সদস্যদের মৌলিক প্রশিক্ষন পরিদর্শনে উপ-মহাপরিচালক শহীদ তুরাবের হত্যাকারী সাবেক ওসি মঈনসহ সকলকে অবিলম্বে গ্রেফতার করুন কাল স্মারকলিপি প্রদান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডেঙ্গুর সংক্রমণ হচ্ছে, এটাই আমাদের চিন্তার বিষয় : উপদেষ্টা নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাত্রদল নেতা শাকিলের মায়ের ইন্তেকাল, মদন মোহন কলেজ ছাত্রদলের শোক সিলেটে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান-আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ

সিলেট ডলিয়া গ্রামে শিবমন্দিরের জমি দখলে অপতৎপরতার অভিযোগ-সংবাদ সম্মেলন

রিপোর্টার নামঃ
  • বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১ বার পড়া হয়েছে

অনুসন্ধান নিউজ :: সিলেট শহরতলীর শিবটিলার শিবমন্দিরের জমি ভূমিখেকোরা দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছে এবং নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৭নং ওয়ার্ডের ডলিয়া গ্রামের বাসিন্দা নিতাই দেবনাথের স্ত্রী জয়ন্তী বালা দেবী। গ্রামবাসীর জন্য সবসময় ধর্মীয় ও সেবামূলক কাজ করেন এবং এসব কাজ করতে গিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন মহল থেকে হত্যার হুমকি পেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জয়ন্তী বালা দেবী বলেন, আমার বাড়ির পাশের শিবটিলায় অবস্থিত শ্রী শ্রী শিব মন্দিরটি জেলা প্রশাসনের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিভিন্ন সময় এই টিলার মাটি কেটে একদল ভূমিখেকো টিলাটি প্রায় সাবাড় করে ফেলেছে। আমি প্রতিবাদ করে সরকারের বিভিন্ন দফতরে আবেদন-নিবেদন করে একসময় এই অপকর্ম বন্ধে সক্ষম হই। সেই থেকে প্রাণনাশের হুমকি আমার নিত্যসঙ্গী।
তিনি বলেন, আমাদের পুরনো শিব মন্দিরটি জরাজীর্ণ হওয়ায় পূজা-অর্চনার সুবিধার জন্য আমি তা সংস্কার করি এবং ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এই খতিয়ানের ২ একর ভূমি মন্দিরের নামে স্থায়ী বন্দোবস্ত দিতে ভূমিমন্ত্রীর কাছে আবেদন করি। এরপর মন্দির সংস্কার ও শ্রী বৃদ্ধি হলে সেখানে বিভিন্ন পূজার্চ্চনায় শত শত ভক্তের সমাগম ঘটছিল। এবারও ভূমিখেকো চক্রটি মন্দিরের ভূমি দখলে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করতে শুরু করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। পরে ওই মন্দিরের পাশে একটা দুর্গামণ্ডপও নির্মাণ করি এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সেখানে নিয়মিত পূজার্চ্চনা করছিলেন। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মন্দিরের দেখাশোনা ও সার্বিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে না পেরে ভূমিখেকোরা ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল রাতে মন্দিরটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় এবং মন্দিরের প্রণামী বাক্সসহ যাবতীয় আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। এতে মন্দিরের প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরে ওই বছরের ২ মে আমি কয়েকজন কাজের লোক নিয়ে মন্দিরটি পূণঃনির্মানের চেষ্টা করলে এলাকার প্রভাবশালী মহল আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। তখন আমি প্রাণে ভিক্ষা চেয়ে মন্দির এলাকা ছেড়ে কোনোমতে ফিরে আসি। তারা আমাকে হুমকি দেয় যে আর কোনোদিন সেখানে মন্দির নির্মাণে গেলে আমাকে বা আমার স্বামী ও সন্তানকে হত্যা করে গুম করে ফেলবে। এই হুমকিদাতা প্রভাবশালীরা হলেন- ওই এলাকার শমদ উল্লার ছেলে শমচু মিয়া, ময়না মিয়ার ছেলে বাচ্চু মিয়া, দুর্গেশ দেবনাথের তিন ছেলে জিতেন্দ্র দেবনাথ বিতুল, বিমল দেবনাথ ও শিবুল দেবনাথ, যগেশ দেবনাথের দুই ছেলে ময়না দেবনাথ ও শিপেন্দ্র দেবনাথ, ময়না দেবনাথের ছেলে বকুল দেবনাথ ও শিবুল দেবনাথের ছেলে উজ্জ্বল দেবনাথ। এরপর থেকে আমি যখনই মন্দিরটি পূণঃনির্মাণ করার চেষ্টা করেছি তখনই তারা আমার উপর হামলার চেষ্টা করে মন্দির নির্মাণে বাধা দিয়েছে। এর পেছনের কারণ, মন্দিরের জমি দখলের লোভ।
জয়ন্তী বালা দেবী বলেন, ইদানিং তারা সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানা শাখা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ভৈরব দেবনাথের প্ররোচনায় এলাকার আরও কিছু মানুষকে নিজেদের সঙ্গে নিয়ে মন্দির নির্মাণের নামে জমি দখলের চেষ্টা করছে। তারা মন্দিরের জমি দখল ও অনুদান লুটপাটের হীন উদ্দেশ্যেই আমার পরিশ্রমে গড়ে ওঠা ধর্মীয় এ প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে দূরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন এবং নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ৩/৪ দিন আগে মন্দিরের জমির ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করে তালতলার গুলশান কমপ্লেক্সের জনৈক কুতুব উদ্দিনের ছেলে রাজিব আহমদ একাধিক সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন। রাজিবের এ তৎপরতা সেই দখলবাজির অংশ কি না বা সরকারি খাস জমি যা মন্দিরের জমি, সেটা তিনি কার কাছ থেকে কিভাবে কিনলেন- তা খতিয়ে দেখা জরুরি। এ ব্যাপারে আমি সিলেটের মাননীয় জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন করেছি। এয়ারপোর্ট থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছি।
তিনি বলেন, আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও এয়ারপোর্ট থানাকে আমার অভিযোগ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে মন্দির পূণঃস্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছি। আর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের প্রতি আহ্বান- ডলিয়া পূজা পরিষদের সরকারি অনুদান যেন আমার মাধ্যমে প্রদান করা হয়। অন্যথায় তা লুটপাট হতে পারে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2021 Anushondhan News
Developed by Host for Domain