অনুসন্ধান নিউজ :: গতকাল রবিবার রাত থেকে টানা বর্ষণে প্রায় ২৮ টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এরফলে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। নগরীর প্লাবিত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন নগর ভবন কতৃর্পক্ষের।
গতরাত থেকে সোমবার ২১৪ মি.মি (দুপুর ১২টা) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা ছাড়িয়ে ১০.৯৪ সে.মি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার পরিবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছেন। সোমবার সকাল থেকে স্থানীয় কাউন্সিলর মাধ্যমে বন্যায় আক্রান্তদের মাঝে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পেঁৗছে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি ও আশ্রয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ মখলিছুর রহমান কামারন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার আহমদ চৌধুরী,কাউন্সিলর ফজলে রাব্বি চৌধুরী মাসুম,হমায়ুন কবির সুহিন,জয়নাল আবেদীন,সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ সোমবার (০৩ জুন) দুপুর ২টায় নগরীর মিরাবাজার, তেররতন, উপশহর ও ১০ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা। এসময় তারা আশ্রয় কেন্দ্রসহ পানিবন্দিদের খোঁজ খবর নেন।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রোষ্টার ডিউটি পালন করবেন সিসিকের কর্মকর্তাগণ। জরুরি সেবায় কন্ট্রোলরুম যোগাযোগের ফোন নম্বর (০১৯৫৮—২৮৪৮০০) ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সোমবার মধ্যরাত থেকে টানাবর্ষণ হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন করে আরও কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডে এরও ১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সকাল থেকে নগরীর প্লাবিত এলাকাগুলোতে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছে। আজ রাতে ওইসব এলাকায় রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। নগরীর সকল ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে নগর ভবন।
তিনি আরও জানান, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে নগরীর ছড়া—খাল পানি ভরে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল ওয়ার্ড সমূহে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে সব ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিসিক। আশ্রয় কেন্দ্রসহ ত্রাণ সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সিসিক কতৃর্পক্ষ। ইতিমধ্যে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে খুলে দেওয়া হয়েছে। ১৫ নং ওয়ার্ডে কিশোরী মোহন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়, বসন্ত মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, মওদুদ আহমের বাসায় আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। ১৩ নং ওয়ার্ড মির্জা জাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ২৪ নং ওয়ার্ড তেররতন স্কুল, ওমর শাহ স্কুল ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসিটুলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসেফ ঘাসিটুলা স্কুল, জালালাবাদ মডেল স্কুল, মঈনুদ্দিন মহিলা কলেজ, কানিশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কাউন্সিলর তাদের নিজ বাস ভবনে পানিবন্দী মানুষকে আশ্রয় প্রদান করছেন। ইতিমধ্যে মহানগরীতে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী আবস্থায় রয়েছেন।
সাজলু লস্কর আরও জানান, কাউন্সিলরদের দেয়া তথ্যমতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।